ঢাকা , শনিবার, ১০ মে ২০২৫ , ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
রাতভর নাটকীয়তার পর সকালে গ্রেফতার কারাগারে আইভী তীব্র তাপদাহে পুড়ছে দেশ উত্তাল শাহবাগ, যেন ফিরে এসেছে ‘জুলাই’ নির্বাচন বিলম্বিত হলে জনগণই রাস্তায় নামবে- ফারুক অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করলে কঠোর শাস্তিÑ নৌ-উপদেষ্টা সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ জেলায় ৬ জনের মৃত্যু হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী লিখে সংবাদ, খুলনায় পত্রিকা অফিসে আগুন ময়মনসিংহে হত্যার আসামির ছুরিকাঘাতে যুবক খুন টাঙ্গাইলে চলন্ত মোটরসাইকেলে ককটেল নিক্ষেপ দুই ভাই আহত পেঁয়াজ-ডিম-সবজির দাম চড়া নাভিশ্বাসে ক্রেতা এআই দক্ষতায় পিছিয়ে বাংলাদেশ পুঠিয়ায় প্রশাসনের যোগসাজশে অবৈধ পুকুর খননের হিড়িক আধুনিকতার প্রভাবে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার মাটির চুলা স্থানীয়দের বাধায় পিছু হটলো বিএসএফ মৌলভীবাজারে সীমান্তে ১৫ জনকে ‘পুশইন’ বিএসএফের আমতলীতে দুই বছরে অর্ধশতাধিক দুর্ঘটনা নৌ পুলিশের অভিযানে ২৭৬ জন গ্রেফতার, ১০ মরদেহ উদ্ধার চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিজ বাড়ি থেকে আইনজীবীর লাশ উদ্ধার আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন চয়নিকা চৌধুরী রিমান্ড শেষে কারাগারে পলক
আবহাওয়া অধিদফতর * রাজধানীতেও সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় হাঁসফাঁস : তিনদিনের জন্য নতুন সতর্কতা জারি * দিন-রাতের তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে, ৪৫ জেলার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ * জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবেই আবহাওয়াজনিত ব্যত্যয় ঘটছে: অভিমত বিশেষজ্ঞদের

তীব্র তাপদাহে পুড়ছে দেশ

  • আপলোড সময় : ১০-০৫-২০২৫ ১২:৩৩:৫৯ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১০-০৫-২০২৫ ১২:৩৩:৫৯ পূর্বাহ্ন
তীব্র তাপদাহে পুড়ছে দেশ
তীব্র তাপদাহে পুড়ছে দেশ। দিনদিন তাপমাত্রার পারদ ওপরের দিকে উঠছে। প্রখর তাপে বিপর্যস্ত জনজীবন। গরম ও অস্বস্তিতে হাঁসফাঁস করছে সাধারণ মানুষ। সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবীরা। দেশের ৪৫টি জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রার তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। যা আগামী কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে। দেশজুড়ে তাপপ্রবাহের দাপটের মধ্যে আগামী তিন দিনের জন্য নতুন করে সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদফতর। আগামী ২৪ ঘণ্টায় দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে। রাতের তাপমাত্রাও সামান্য বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে সহসাই বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই, উল্টো সারাদেশেই দিনের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে এবং রাতের তাপামাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
গতকাল শুক্রবার দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় দেশের কিছু এলাকায় তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। এদিন চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ ৩৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রা অনুযায়ী, বেশিরভাগ জেলাতেই বর্তমানে মাঝারি তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে। সাধারণত চৈত্র ও বৈশাখের শুরুর দিকে তাপপ্রবাহ বেশি দেখা গেলেও, এ বছর বৈশাখের শেষভাগে এসে তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবেই এ ধরনের আবহাওয়াজনিত ব্যত্যয় ঘটছে। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি পৌঁছায়, তবে তা তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচিত হবে। এই অবস্থায় স্বাস্থ্যঝুঁকি ও কৃষি উৎপাদনে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা সাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, উল্লেখিত সময়ে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। আর রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারি, রাজারহাট, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলাসহ ঢাকা, রাজশাহী এবং খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। তাপমাত্রার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এদিন সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। আগামী শনিবার সারাদেশে দিন-রাতের তাপামাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। একইসঙ্গে সারাদেশে চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী রোববার (১১ মে) পূর্বাভাসে বলা হয়, এদিন থেকে দেশের কিছু কিছু অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গাসহ রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি হ্রাস পেতে পারে। আগামী সোমবার (১২ মে) পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গাসহ রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। তবে এদিন কিছু কিছু জায়গায় তাপপ্রবাহ প্রশমিত হতে পারে। আগামী মঙ্গলবার (১৩ মে) পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, মংমনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু’য়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/বজ্র বৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে। আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, এর পরবর্তী পাঁচ দিন বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, দেশের একটি বড় অংশজুড়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। মৃদু থেকে মাঝারি মানের এই তাপপ্রবাহে জনজীবনে হাঁসফাঁস অবস্থা বিরাজ করছে। এদিন চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। পাশাপাশি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে রাজধানী ঢাকাও। গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারী, রাজারহাট, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, বরিশাল এবং পটুয়াখালী জেলাসহ ঢাকা, রাজশাহী এবং খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস জানায়। এবার উষ্ণতম মাস হিসেবে পরিচিত এপ্রিলে গরম অপেক্ষাকৃত কম ছিল। চলতি মে মাসের প্রথম সপ্তাহেও তাপমাত্রা মোটামুটি সহনীয় ছিল। তবে গত বুধবার থেকে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। এটি আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। তবে টানা কয়েক দিন তাপপ্রবাহের পর বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। সংস্থাটি জানিয়েছে, পাঁচ দিন পর বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়বে এবং এটি অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ জানান, রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি এ বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে ২৮ মার্চ রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়, ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে চলতি বছরে দুই দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ২৮ মার্চ চুয়াডাঙ্গায় এবং ২৩ এপ্রিল যশোরে-৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একইসঙ্গে রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগে তাপপ্রবাহ চলছে। এ অবস্থা আরও অন্তত দুই দিন চলতে পারে।
তীব্র গরমে নগর জীবনে হাঁসফাঁস: তাপপ্রবাহের কারণে তীব্র গরমে নগর জীবনে হাঁসফাঁস অবস্থা বিরাজ করছে। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় অনেকে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বের হননি। যারা জীবন-জীবিকার তাগিদে ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন তাদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে ভ্যাপসা গরম আর তীব্র দাবদাহের। বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া দিনমজুর, রিকশাচালক, হকার, আর নিম্ন আয়ের মানুষ। এই গরমে পেটের দায়ে বাধ্য হয়েই রোদ-গরম উপেক্ষা করে কাজ করতে হচ্ছে তাদের। রোদের উত্তাপ আর গরমের কারণে তাদের অবস্থাও কাহিল হয়ে যায়। গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর মহাখালী, পল্টন, সেগুনবাগিচা, মতিঝিল, শাহবাগ ও নিউমার্কেট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রিকশাচালক ও অন্যান্য শ্রমজীবী মানুষজন ছায়াযুক্ত স্থানে বসে একটু প্রশান্তি খোঁজার চেষ্টা করছেন। যারা রাস্তায়-ফুটপাতে বসে চা-পান বিক্রি করেন তারাও রোদের তীব্রতা থেকে বাঁচতে মাথায় ছাতা নিয়ে বা উপরে ব্যানার দিয়ে সামিয়ানা টানিয়েছেন। রাজধানীর নতুন বাজারে কথা হয় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী ফেরদৌস হাসানের সঙ্গে। তিনি জানান, একটি ব্যক্তিগত প্রয়োজনে বিদেশি দূতাবাসে এসেছিলেন। গরমের কারণে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। গরমে টিকতে না পেরে রাস্তার পাশের বরফ মেশানো শরবত খেয়ে কোনো রকম স্বস্তি খোঁজার চেষ্টা করছেন। তিনি জানান, আজ এত গরম পড়বে আগে জানলে তিনি বের হতেন না। মহাখালীতে যাত্রীর জন্য অপেক্ষায় থাকা রিকশাচালক মনু মিয়া বলেন, এমন রোদ আর গরম জীবনে দেখি নাই। বারবার গলা শুকিয়ে যায়। সকাল থেকে কয়েক লিটার পানি খাইছি। রোদে শরীরের সব পানি শুষে নেয়। একটা ট্রিপ মারার পর বিশ্রাম নিতে হচ্ছে। এভাবে বেশিক্ষণ কাজ করতে পারবো না। এখন গ্যারেজে চলে যাব। আবার রোদ কমলে বিকেলে কিংবা সন্ধ্যার দিকে বের হবো। তালেব নামের আরেক রিকশা চালক বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই অনেক গরম। একটু বৃষ্টি হলে শান্তি লাগতো। আর আজকে সকাল থেকে রোদের তীব্রতা অনেক বেশি। সঙ্গে অনেক গরমও লাগছে। তারপরও এই রোদের মধ্যে কাজ করছি। ঘরে বসে থাকলে তো আর পেটে ভাত পড়বে না। তাপপ্রবাহে কষ্টে পড়েছেন মোটরসাইকেল রাইডশেয়ারিং করে জীবিকা নির্বাহ করেন এমন অনেকেই। বেশ কয়েকজন জানালেন, প্রচণ্ড রোদের কারণে মানুষজন এখন মোটরসাইকেলে যেতে আগ্রহী নয়। সেজন্য দীর্ঘসময় অপেক্ষা করেও কোনো ট্রিপ পাওয়া যাচ্ছে না। আবার রোদেও কষ্ট করতে হচ্ছে। সেলিম হোসেন নামের এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, সকাল থেকে মাত্র দু’টি ট্রিপ পেয়েছি। একটি পান্থপথ থেকে মতিঝিল আরেকটি মতিঝিল থেকে নিউমার্কেট। প্রচণ্ড রোদ আর গরম মানুষ বাইকে চড়তে চাচ্ছে না। আমরা নিজেরাই দুর্বল হয়ে গেছি। সন্ধ্যার পরে বের হওয়া ছাড়া উপায় নেই। এই রোদে থাকলে অসুস্থ হয়ে যাব।
হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে : তীব্র গরমে রাজধানীর হাসপাতালগুলোয় রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। প্রচণ্ড দাবদাহে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) বা কলেরা হাসপাতালে ভিড় করতে দেখা গেছে। আইসিডিডিআর,বির অ্যাসিসটেন্ট সায়েন্টিস্ট শোয়েব বিন ইসলাম বলেন, গরমের কারণে সবাই পিপাসার্ত থাকে। বিশেষ করে দরিদ্র শ্রেণির মানুষ যারা বেশির ভাগ সময়ে বাইরে থাকেন। তাই তৃষ্ণা মেটাতে অনেকেই অনিরাপদ পানি পান ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে থাকেন। এতে ফুড পয়জনিং থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এছাড়া টাইফয়েড ও পানিবাহিত হেপাটাইটিস, জন্ডিস হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। এখন হাসপাতালে যে রোগী পাচ্ছি, এর বেশির ভাগই পানিবাহিত ডায়রিয়া রোগী। অন্যান্য হাসপাতালেও অনেকটা একই ধরনের চিত্র পাওয়া গেছে।
শিশু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তীব্র গরমে কিছুদিন ধরে শিশু হাসপাতালে রোগীর ভিড় বাড়ছে। শিশুদের হঠাৎ সর্দি-জ্বর, গরমজনিত ঠান্ডা, কাশি, শ্বাসকষ্ট, পানিশূন্যতা, দুর্বলতা, হাম, মাম্পস, পেট ব্যথা, বমির মতো উপসর্গ নিয়ে অভিভাবকরা হাসপাতালে আসছেন। এ রোগীদের বেশির ভাগ নিউমোনিয়াজনিত শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত। এছাড়া গত বছরের চেয়ে কিছুটা কম হলেও এবারও অনেক শিশু ডায়রিয়াজনিত অসুস্থতা নিয়ে ভর্তি হচ্ছে। আরেক চিকিৎসক ডা. ফারহানা আহমেদ বলেন, সাধারণত দেশে এপ্রিল-মে গরমের তীব্রতায় শিশু ও বয়স্করা বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এবার বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে প্রায় সব ভাইরাসই স্ট্রেইন বা পরিবর্তন করতে শুরু করছে। ফলে শিশুরা কোন ভাইরাস দ্বারা রোগাক্রান্ত হচ্ছে, স্পষ্ট করে বলা মুশকিল। তবে ঘরে ঘরে শিশু ইনফ্লুয়েঞ্জাসহ বিভিন্ন ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, হাসপাতালে ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে শীতজনিত ঠান্ডা-কাশির রোগী থাকলেও মার্চ-এপ্রিল ও মে মাসে নিউমোনিয়া রোগী বাড়ছে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স